Latest News

 

The uncertain future of Bangladeshi students because of TOEIC certificates in Britain

TOEIC সার্টিফিকেট-এর কারণে ব্রিটেনে হাজার হাজার বাংলাদেশী স্টুডেন্টদের ভবিষ্যত অনিশ্চিত।ইউকে ভিতরে লীভ্ ট্যু রিমেইন এক্সটেনশন করতে হলে অথবা বাহিরে ওভারসীস্ পোস্টে ভিসা বা এন্ট্রি ক্লিয়ারেন্সের জন্য আবেদনকালে প্রত্যেক আবেদনকারীকে জেনুইন অথেনটিক ডকুমেন্টস্ জমা দিতে হবে। ছাত্র-ছাত্রীরা ক্ষেত্রে মোটেই ব্যতিক্রম নয়। আবেদনের কোন পর্যায়ে অথবা আবেদনের সাথে জাল ডকুমেন্ট জমা দিলে তা আবেদনকারীর জন্য এক মারাত্মক পরিনতি ডেকে আনবে। হোম অফিস বা হাইকমিশন জাল-জালিয়াতি দরকারী তথ্য গোপনকে অত্যন্ত সিরিয়াসলী দেখে থাকে। বিদ্যমান আইন অনুযায়ী কোন ছাত্র-ছাত্রী তার আবেদনের সাথে মিথ্যা জাল ডকুমেন্ট জমা দিলে সেই ছাত্র-ছাত্রীকে দশ বছরের জন্য যে কোন প্রকার আবেদনের অযোগ্য হবে। অর্থাৎ সংশ্লিষ্ট আবেদনকারী দশ বছরের মধ্যে ইউকেতে আসার জন্য কোন আবেদন করলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তা নাকচ হয়ে যাবে। তাই প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীদের উচিৎ আবেদনপত্রের সাথে সত্য সঠিক তথ্যাদি ডকুমেন্টস জমা দেওয়া। কোন শর্ত বা রিকোযারমেন্ট পূরন করতে না পারলে তাদের উচিৎ আবেদন না করা অথবা রিকোযারমেন্ট পূরণ করা পর্যন্ত অপেক্ষা করা। আর যদি ছোটখাটো কোন শর্ত বা কন্ডিশন হয় তাহলে সেটা পুরণ না করার কারণ কাভারিং লেটারে সুন্দর করে ব্যাখ্যা দিয়ে দেয়া। কারণ এন্ট্রি ক্লিয়ারেন্স অফিসার বা হোম অফিসের ইমিগ্রেশন অফিসাররাও তো মানুষ - হিউম্যান বিংস্ সুন্দর করে ব্যাখ্যা কাভারিং লেটারে দিলে তারা অনেক সময় তাদের বিবেচনা ডিসক্রিশন আবেদনকারীদের পক্ষে প্রয়োগ করেন।


সম্প্রতি TOEIC-এর ইংলিশ সার্টিফিকেট নিয়ে বিলেতে এক লংকাকান্ড ঘটে গেল। বর্তমান আইন অনুযায়ী স্টুডেন্ট ভিসা বা ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর জন্য প্রত্যেক আবেদনকারীদেরকে অন্যান্য শর্তাবলী পুরণের পাশাপাশি ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ রিকোয়ামেন্টও পূরন করতে হয়। বিভিন্ন কোর্স-এর জন্য বিভিন্ন ধরনের রিকোয়ারমেন্ট। কলেজ ইউনিভার্সিটি ভেদে আবার ল্যাংগুয়েজ রিকোয়ারমেন্টের তারতম্যও দেখা যায়। ছাত্র-ছাত্রীরা বিভিন্ন উপায়ে এবং বিভিন্ন বোর্ড বা প্রতিষ্ঠান/ইন্সস্টিটিউট থেকে বিভিন্ন ধরনের ইংরেজি কোর্স সম্পন্ন বা প্রয়োজনীয় স্কোর করার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ল্যাংগুয়েজ রিকোয়ারমেন্ট পুরন করতে পারে। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রীরা TOEIC টেস্টের মাধ্যমে সেই রিকোয়ারমেন্ট পুরণ করার চেষ্টা করেছেন। আর তাতেই ঘটেছে সকল বিপত্তি


TOEIC-
এর ফুল নাম হলো Test of English for International Communication. এটি আন্তর্জাতিক একটি বাচাই প্রদ্ধতি যার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পরিবেশে মানুষের ইংরেজির ভাষার উপর দক্ষতা এসেস্ করা হয়। এটি করে ETS – Educational Testing Service. এটি বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ প্রাইভেট এডুকেশনাল টেস্টিং এন্ড এসেসমেন্ট সংস্থা। এটির সদর দপ্তর আমেরিকার নিউ জার্সিতে অবস্থিত। এটি গঠিত হয় ১৯৪৭ সালে।
গত বছর অর্থাৎ ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারীতে ব্রিটেনের BBC- পানারামাতে একটি ইনভেস্টিগেটিভ্ রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। আন্ডারকাভার রিপোর্টার এর মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে বহুল প্রচারিত দর্শক নন্দিত পানারমা প্রোগ্রামে দেখানো হয় যে আবেদনকারী ছাত্র-ছাত্রীরা ৫০০ পাউন্ড দিয়ে জালিয়াতি করে প্রক্সি-টেকার দিয়ে স্পিকিং টেস্টের মাধ্যমে সার্টিফিকেট নিচ্ছে যাদের ইংরেজি ভাষাজ্ঞান খুবই দুর্বল অথবা ইংরেজি একবারেই বলতে পারেনা। অর্থাৎ আবেদনকারী ছাত্র-ছাত্রী নয় বরং অন্য এক ব্যক্তি শত শত, এমনকি হাজার হাজার প্রার্থীর প্রক্সি স্পিকিং টেস্ট দিয়ে দিচ্ছে। লিখিত পরীক্ষাতেও উত্তরগুলো খোলামেলাভাবে বলে দিচ্ছে। এই রিপোর্টের পর হোম অফিস থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের উপর খড়গ নেমে এসেছে। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে আনুমানিক ৫০ হাজার ছাত্র-ছাত্রী TOEIC টেস্টের জালিয়াতির কারণে মহাসমস্যায় পড়েছে। এর মধ্যে ধারণা করা হচ্ছে ৩০ হাজার ছাত্র/ছাত্রীরা সরাসরি TOEIC-এর জালিয়াতির সাথে জড়িত। আর বাকী প্রায় ২০ হাজার এর মত হয়তো তারা অজান্তে ভিকটিম হয়েছে বা যাদের ইংরেজীতে কিছুটা দক্ষতা আছে এবং হোম অফিস বিকল্প পদ্ধতিতে তাদের ইংরেজির দক্ষতা এসেসমেন্ট করে নিচ্ছে। মোট ৫০ হাজার এর মধ্যে ধারণা করা হচ্ছে কয়েক হাজার বাংলাদেশী ছাত্র-ছাত্রীরাও মহা সমস্যায় পড়েছে।
TOEIC-
এর সাথে যারা জড়িত তাদের ব্যাপারে হোম অফিস কঠোর একশনে চলে গেছে। কাউকে কোন ছাড় দিচ্ছে বলে মনে হয়না। আবেদনের সাথে TOEIC সার্টিফিকেট দিলেই শুধু তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নিচ্ছে তা নয় বরং অতীতে কোন সময়েও যদি TOEIC সার্টিফিকেট দিয়ে কোন ধরনের লীভ পেয়ে থাকে অথবা TOEIC সার্টিফিকেটের জন্য পরীক্ষা দিয়েছেন বা পরীক্ষা দিয়ে সার্টিফিকেট নিয়েছেন কিন্তু আবেদনের সাথে তা জমা দেননি বা কখনও সার্টিফিকেট ব্যবহারই করেননি তাদের আবেদনও প্রত্যাখ্যান করে রিমোভাল ডাইরেকশন দিয়ে দেশে পাঠাবার চেষ্টা করছে। এযেন যেকোন ধরনের মামুলি সংশ্লিষ্টতার জন্যও পূরোদমে দায়ী করা হচ্ছে। এমনও হয়েছে / বছর আগে TOEIC সার্টিফিকেট দিয়ে ভিসার মেয়াদ বাড়িয়েছেন এরপর / বার অন্যান্য স্বীকৃত প্রতিষ্ঠানের সার্টিকেটই দিয়ে লীভ বাড়িয়ে ব্রিটিশ নাগরিককে বিয়ের মাধ্যমে পার্মানেন্ট রেসিডেন্স পেয়েছে, এবং পরে বেড়াতে গিয়ে আসার সময় এয়ারপোর্টে আটকিয়ে দিয়েছে অতীতে TOEIC সার্টিফিকেট ব্যবহার করার কারণে। অনেককে হঠাৎ রেইড দিয়ে বাসা থেকে ধরে কোন ইন-কান্ট্রি আপীল রাইট না দিয়েই দেশে পাঠিয়ে দিচ্ছে। আবার অনেককে দীর্ঘদিন পর আবেদনকে প্রত্যাখ্যান করে কোন ধরনের আপীল রাইট না দিয়ে রিমোভাল ডাইরেকশন দিয়ে প্রতি সপ্তাহে হাজিরা দেয়ার রিপোর্টিং রেস্ট্রিকশন দিয়ে দিচ্ছে।
ইন-কান্ট্রি আপীল রাইট না থাকার কারণে TOEIC-এর সাথে জড়িত ছাত্র-ছাত্রীরা দারুন বিপাকে পড়েছে। তারা হোম অফিসের অযৌক্তিক এবং আন্ফেয়ার সিদ্ধান্তকে কোর্টে চ্যালেঞ্জ করতে পারছেন না। তাদেরকে হোম অফিসের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করতে হবে নিজ দেশে ফিরৎ গিয়ে অর্থাৎ তাদের শুধু আউট অব কান্ট্রি আপীল রাইট আছে। দেশের ভিতর থেকে যেখানে কিছুই করা যাচ্ছে না - কোন পরিত্রাণ পাওয়া যাচ্ছে না - বাহিরে গিয়ে সেখান থেকে আপীলের মাধ্যমে কিইবা করা যাবে? আউট অব কান্ট্রি আপীল রাইট এক্সারসাইজ করে কেউ জয়ী হয়ে বিলেতে ফিরে এসেছেন এমন ঘটনা কখনও শুনা যায়নি। তাই TOEIC ভূক্তভোগী ছাত্র-ছাত্রীদের সামনে সম্ভবত: একটি মাত্র পন্থা খোলা আছে আর তা হচ্ছে জুড়িশিয়াল রিভিউ এর মাধ্যমে হোম অফিসের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করা। এতে সমস্যা হচ্ছে জুড়িশিয়াল রিভিউর আবেদন অনেক ক্ষেত্রে উচ্চ আদালতে গ্রহণ করা হচ্ছে না এই বলে যে যেহেতু আউট অব কান্ট্রি আপীল রাইট আছে সেক্ষেত্রে জুড়িশিয়াল রিভিউর এভিনিউ এক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।
সাধারনত: জালিয়াতির অভিযোগ থাকলে রেসপনডেন্টকেই প্রমাণ করতে হয়। তা করতে হয় হাইয়ার স্ট্যান্ডার্ড অব প্রোফ-এর মাধ্যমে। অথচ ইমিগ্রেশন সংক্রান্ত ম্যাটারস হচ্ছে সিভিল মেটারস আর এর স্ট্যান্ডার্ড অব প্রোফ হচ্ছে অন দ্য ব্যালান্স অব প্রবাবিলিটি। এসব কেইসগুলোতে বেনিফিট অব ডাউট দেয়া হয় আবেদনকারী বা আপীলকারীদেরকে। TOEIC -এর সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যাপারগুলো পুরো ব্যতিক্রম দেখা যাচ্ছে। TOEIC এর সাথে জড়িত আবেদনকারী ছাত্র-ছাত্রীদেরকে হোম অফিস The Immigration and Asylum Act 1999 এর ১০() (বি) ধারা অনুযায়ী লীভ্ বাতিল করে কোন আপীলের সুযোগ না দিয়ে রিমোভাল ডাইরেকশন দিয়ে দিচ্ছে। উপরোক্ত ধারা হোম অফিসকে ক্ষমতা দিয়েছে যে-কেউ যদি জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ভিসা বা লীভ্ পেয়ে থাকেন তাহলে তার সেই ভিসা বা লীভ্ বাতিল করার। এটি একটি ড্রাকনিয়ান আইন যা হোম অফিস ব্যবহার করছে।
উপরে উচ্চ আদালতে জুড়িশিয়াল রিভিউর মাধ্যমে চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ভাল সাক্ষী, প্রমান আবেদনকারীর হাত যদি ক্লিন না থাকে, তাহলে উচ্চ আদালতে গেলেইতো আর হলো না। ওখানেও জিতা যাবে না। ফলে অযথা সময় অর্থ দুটিই নষ্ট হবে। হোম অফিস প্রায় সময় বলছে তাদের কাছে ভয়েস রেকর্ডারে রেকর্ডকৃত ভয়েস আছে যাতে তারা প্রমান করতে পারবে যে ভয়েস আবেদনকারীর নয় বরং প্রক্সি টেকারের। তাদের কথার যুক্তি পয়েন্ট আছে। প্রফেশনাল অভিজ্ঞতার আলোকে আমরা বলতে পারি যে TOEIC সম্পর্কিত সমস্যায় জর্জরিত যত ছাত্র-ছাত্রী আমাদের সাথে সাক্ষাত করতে আসে পরামর্শ নেয়ার জন্য তাদের বেশীরভাগই দেখা যায় জালিয়াতির সাথে কোনোনাকুনভাবে জড়িত। অর্থাৎ তারা নিজেরা টেস্ট দেয় নাই। অন্যকে দিয়ে অর্থের মাধ্যমে টেস্ট দিয়েছে। এই যদি হয় অবস্থা তাহলে তারা আইনের আদালতে গিয়ে কিভাবে নিজেকে নির্দোষ প্রমান করবে এবং আদালত থেকে সুবিচার পাবে?
বাংলাদেশ থেকে যারা ব্রিটেনে পড়াশুনা করতে আসে তারা সবাই মেধাবী-একথা সবাই বলে থাকে। সত্যিই তো এভারেজের চেয়ে মেধাবী না হলে তো বিলেতে পড়াশুনার স্বপ্ন দেখার কথা নয়। তাছাড়া বাংলাদেশে একটি ছাত্র প্রথম শ্রেণী বা তারও পূর্ব থেকে ইংরেজি বর্ণমালার সাথে পরিচিত হয়। বিলেতে পড়াশুনার ভাষা মাধ্যম হচ্ছে ইংরেজি। সুতরাং বাংলাদেশ থেকে আসা ছাত্ররা যখন ইংরেজি ভাষার সার্টিফিকেটের জন্য জাল-জালিয়াতির আশ্রয় নেয় বা অর্থের বিনিময়ে সার্টিফিকেট নেয়ার চেষ্টা করে তাদের জন্য খুবই আফসুস দুঃখ হয়। ৫০০ পাউন্ড দিয়ে যখন এসব ছাত্ররা সার্টিফিকেট কিনার চেষ্টা করে তখন তাদেরকে অর্থ দিয়ে বিষ পানের চেষ্টা করছে বললে বোধ হয় অত্যুক্তি হবে না। সত্যিই কষ্ট পাই যখন দেখি - একজন ভাল ছাত্র, তার ইংরেজিও মোটামুটি ভাল, একটু কষ্ট প্রস্তুতি নিয়ে ইংরেজি ল্যাংগুয়েজ টেস্ট দিলে তাদের জন্য অকৃতকার্য হওয়া অসম্ভব ছিল-এমন ছাত্র-ছাত্রী যখন টাকা দিয়ে জাল সার্টিফিকেট নেয় বা প্রক্সিও মাধ্যমে টেস্ট দেয় তাদের জন্য বড়ই করুনা হয়। সাথে সাথে প্রচন্ড গোসসাও হয়। তারা যে লোভের বসবর্তি হয়ে বা অসৎ লোকের পাল্লায় পড়ে অথবা বিনা কষ্টে টাকা দিয়ে হলেও কিছু পাবার লাল্সা থেকে এসব করেছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
পরিশেষে, আমরা সকল ছাত্র/ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলবো - তারা যেন কোন অবস্থায় বা কোন ষ্টেজে জাল-জালিয়াতির আশ্রয় না নেন। কেননা, এগুলো তাদের পরবর্তী জীবনে মারাত্মক পরিনতি নিয়ে আসবে। তাদের জন্য বিলেতের দরজা অন্তত: দশ বছরের জন্য বন্ধ হয়ে যাবে। প্রত্যেক আবেদনকারীকে এখন আবেদনের সাথে বাধ্যতামূলক বায়োমেট্রিক ফিংগারপ্রিন্ট দিতে হয়। সুতরাং কোন অবস্থায় কোনভাবে নিজেদের পরিচিতি লুকিয়ে রাখতে পারবেন না। তাই সাবধান

 

0 comments:

 
Top